শবে বরাত ২০২৫ সালের কত তারিখে শুরু হবে এবং শবে বরাত মাসে এর গুরুত্ব পুণ্য ফজিলত সম্বন্ধে মুসলমান ধর্মের মানুষেরাই শুধু নয় অন্যান্য সকল ধর্মের মানুষেরা অনুসন্ধান করে থাকে ।তাই আজ পরিপুন্ন শবে বরাত সম্পর্কে আলোচনা করব ।
তাহলে চলুন শবে বরাত ২০২৫ কত তারিখে শুরু হবে ,ফজিলত কি কি আছে সে সম্বন্ধেবিস্তারিতআলোচনা করা যাক । আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। পেজসুচিপত্র ঃশবে বরাত ২০২৫ সালের কত তারিখে হবে
- শবে বরাত ২০২৫ সালের কত তারিখ হবে ।
- ইসলামি বিখ্যাত দিবস সমূহ ।
- শাবান মাসের ফজিলত ।
- শবে বরাত সম্পর্কে আলোচনা ।
- শবে বরাত সম্পর্কে হাদীস ।
- শবে বরাতের উদ্দেশ্য ।
- শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফজিলত ।
- শবে বরাতের হাদীসের প্রাসঙ্গিক অনুবাদ ।
- শবে বরাতে কোন কোন সূরা বেশি বেশি পড়তে হয় ।
- শাবান মাসের যে তাসবিহ ,তাহলিল ও জিকির পড়লে বেশি সওয়াব ।
- শবে বরাতের রাতের ফজিলত।
- শবে বরাত কি ভাগ্য খোলার রাত ।
শবে বরাত ২০২৫ কত তারিখে হবেঃ
শবে বরাত ২০২৫ সালের কত তারিখে সে বিষয়ে পরিপুন্ন ভাবে বিস্তারিত তথ্য পাবেন আজকের আলোচনা থেকে । শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে "শবে-বরাত "বলা হয় ।শবে-বরাত কথাটি ফারসি থেকে এসেছে । "শব মানে রাত,বরাত মানে মুক্তি "শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত। শবে বরাতের -আরবী অর্থ হল "লাইলাতুল বারকাত"। হাদিস শরিফে-শাবান মাসের মধ্যে রজনী বলা হয় ।
বর্তমান দেশের আকাশে হিজরী শাবান মাসের চাঁদ দেখা গেলে ৩১ জানুয়ারী বুধবার শাবান মাসের পহেলা তারিখ হিসেবে পাওয়া যায় এবং আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারী বুধবার তারিখ পর্যন্ত শাবান মাস চলবে । শাবান মাসের ১৪ তারিখ সারা বিশ্বে পবিত্র শবে-বরাত উদযাপন করা হয় ।অথাৎ শাবান মাসের ১৪ তারিখ ইংরেজি ফেব্রু্য়ারী মাসের ১৪ তারিখ সারা বাংলাদেশে পালিত হয় ।
ইসলামী বিখ্যাত দিবস সমূহঃ
ইসলামী দিবস গুলোর মধ্যে যেসকল রজনী বিখ্যাত । এর মধ্যে পাঁচটি রাত বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য ।এই বিশেষ পাঁচটি রাত হল ঃ শবে মেরাজ, শবে বরাত ,শবে কদর, দুই ঈদের রাত্রি।
আল্লাহু তাআলা বলেছেন, নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে ,নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারি ।
শাবান মাসের ফজিলতঃ
শাবান মাসের ফজিলত কি ? শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে শবে বরাত বলে ।শাবান মাস আরবি বছরের অষ্টম তম মাস ।এ মাসটি আরবি ১২ মাসের মধ্যে একটি উল্লেখ যোগ্য ফজিলতের মাস ।শাবান মাসকে বছরের ফজিলত পূর্ণ মাসের মধ্যে একটি অন্যতম ফজিলত পূর্ণ মাস বলা হয় ।এ মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে শবে বরাতের মতো একটি ফজিলত পূর্ণ রাত্রিতে এ মাসের মধ্যে নিহিত বলে এর মর্যাদা এবং গুরুত্ব আরও অনেক বেশি রয়েছে । আর ও এক হাদীসে বর্ণিত আছে ,যে ব্যক্তি দুই ঈদের দুই রাত এবং অর্ধ শাবানের রাত জেগে ইবাদত করবে তার অন্তর কেয়ামতের দিন ও মরবেনা।
শবে বরাত সম্পর্কে আলোচনা ঃ
শবে বরাত সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে স্পষ্ট হয় যে শবে বরাত বা মধ্য শাবান বা লাইলাতুল বরাত হচ্ছে হিজরি শাবান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে পালিত হওয়া মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ রাত। উপমহাদেশে সাধারণত এ রাতকে শবে বরাতের রাত বলা হয় । ইসলাম ধর্মের মতে , মহান আল্লাহু তার বান্দাকে এ রাতে ইবাদত করার মাধ্যমে ক্ষমা করে থাকেন ।
শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস ঃ
শবে বরাত সম্পর্কে হাদিস ও কুরআন কি বলে ? বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অনেক মুসলমান নফল ইবাদতের মাধ্যমে শবে বরাত পালন করে ।এই রাত সম্পর্কে একটি সহি হাদিস যা সুনানে ইবনে মাজাহ এর ইকামতুস সালাত অধ্যায়ের আবু ......।আশআরী থেকে বর্ণিত যে ,রাসূ্ল কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন , নিশ্চয়ই আল্লাহু মধ্য শাবানের রাতে সমস্ত সৃষ্টির দিকে বিশেষ নজর দেন ও মুশরিক এবং মুসাহিন ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন ।
অন্য এক হাদীসে বর্ণিত আছে যে ,ইসলামিক জীবনি মতে ,এই রাতে আল্লাহু তার বান্দাকে বিশেষ ভাবে ক্ষমা করেন ।বার শিয়া মুসলিমরা এই তারিখে মোঃ মাহদী্র জন্মদিন উদযাপন করে থাকেন।
শবে বরাতের উদ্দেশ্য ঃ
শবে বরাতের উদ্দেশ্য কি তা এই মাসের ইবাদত ও ফজিলতের বর্ণনা গুলো লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় ।যেহেতু শবে বরাত কে ভাগ্য রজনীর রাত বলা হয় অর্থা্ৎ এই রাতে সমগ্র বিশ্বে লক্ষ কোটি মানুষ রাত্রি জেগে আল্লাহুর কাছে নিজেদের চাওয়া পাওয়ার না বলা কথা গুলো তুলে ধরেন । যেমন , কেউ বা রিজিক চাই, কেউ চাই বাচ্চা,কেউ চাই আল্লাহু যেন তাকে সুস্থতা দান করেন ,কেউ চাই লেখাপড়ায় বুদ্ধি হোক ।
আবার কাউ চাই তার সংসার সুখ শান্তিতে ভরে থাকুক । আবার কেউ চাই পূর্ব পুরুষের আত্মার শান্তির জন্য আল্লাহুর কাছে প্রার্থনা করে ।আবার কেউ কেউ এই রাতে ইবাদতের পর আল্লাহুর কাছে নিজের জন্য একজন উত্তম জীবন সঙ্গী পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করে থাকে ।
শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফজিলতঃ
শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে বর্ণনা করে শেষ করা সম্ভব নয় । ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস মতে ,এ রাতে বিশেষ ভাবে আল্লাহু তার বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন । বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অনেক মুসলমান নফল ইবাদতের মাধ্যমে শবে বরাত পালন করেন।
শবে বরাতের হাদিসের প্রাসঙ্গিক অনুবাদঃ
শবে বরাতের হাদিসের প্রাসঙ্গিক অনুবাদে হযরত আয়েশা ( রাঃ) বলেন , এক রাতে আমি ঘুম থেকে চোখ মেলে রাসূল কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খুঁজে পেলাম না । তাকে খুঁজে না পেয়ে তাকে তালাশ করতে বেরিয়ে পড়লাম, দেখি যে তিনি জান্নাতুল বাকিয়াতে রয়েছেন । তিনি বললেন , তুমি কি এই ভয় করছিলে যে "মহান আল্লাহ এবং তার রাসূল " তোমার উপর জুলুম করবে । অর্থাৎ তোমার হক নষ্ট করে ,আমি অন্যর স্ত্রীর ঘরে চলে যাব । আমি বললাম ইয়া রাসূলাল্লাহ ,আমি তো এই ধারণা ।
শবে বরাতে কোন কোন সূরা বেশি বেশি পড়তে হয়ঃ
শবে বরাতে কোন কোন সূরা গুলো বেশি বেশি পড়লে আল্লাহু পাক খুশি হন সে সম্বন্ধে আমাদের সকলের সঠিক নিয়ম কানুন জানা দরকার । শবে বরাতের রাতে নফল নামাজ পড়তে হয় । কুরআন তেলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিল ও জিকির বেশি বেশি পড়তে হয় ।
তবে এই রাএে সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করার কথা বেশি বেশি বলা হয় । কারন এটি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার উত্তম উপায় বলে বিশ্বাস করা হয়। তাই এ রাতে বেশি বেশি সূরা ইয়াসিন পাঠ করতে হয় । এ রাতে বেশি বেশি দরুদ শরীফ পাঠ করলে বহু সওয়াব হাসিল হয় ।
মাসের যে তাসবিহ -তাহলিল ও জিকির পরলে বেশি সওয়াব
শাবান মাসে যে তাসবিহ-তাহলিল পরলে বেশি বেশি সওয়াব পাওয়া যাই সে সম্বন্ধে হয়তো আমাদের অনেকেরই জানা আছে আবার অনেকেরই অজানা রয়ে গেছে । এক হাদিসে বর্ণিত আছে যে রাসূল কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, শাবান মাসে যদি কেউ এ দরুদ শরীফ তিন হাজার বার পাঠ করে তবে তার জন্য শাফায়েত করা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায় ।
শবে বরাতের রাতের ফজিলতঃ
শবে বরাতের রহমত ও মাগফেরাতের রাত কবে থেকে এ বিষয়ে আমরা প্রায় সকলেই জানি ।কিন্তু তবুও এই বরকত পূর্ণ মাসের রহমত ও মাগফেরাত সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিতে বিভিন্ন ইসলামিক বই পাঠ করে থাকি। কিছু কিছু বিষয়ে সঠিক তথ্য না পেলে গুগলে অথবা ইউটিউবে সার্চ করে থাকে ।
শাবানের ১৫ তারিখ দিবাগত রাতে মহান আল্লাহ পাক সমস্ত সৃষ্টির প্রতি দৃষ্টিপাত করেন । সমস্ত সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন ।যে সকল ব্যক্তিদের ক্ষমা করবেন না তারা হল পিতা মাতার অবাধ্য সন্তান, রক্তের সম্পর্ক ছিন্নকারি, নেশা জাতীয় দ্রব্যতে আসক্ত, হত্যাকারীদেরকে কখনো ক্ষমা করা হয় না ।
শবে বরাত কি ভাগ্য খোলার রাত ঃ
শবে বরাত কি ভাগ্য খোলার রাত ? এ মাসে শবে বরাতের রাতে কি সত্যি প্রত্যেকটি মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করা হয় ? এ প্রশ্নের উওরে সর্ব প্রথমে যে উওরটি স্পষ্ট হয় সেটি হচ্ছে হ্যাঁ । মূলত সারা বছর আপনার কেমন যাবে ,আপনার রিজিক ,সুখ ,দুঃখ সকল বিষয়ে নির্ধারণ করা হয় এ ভাগ্য খোলার রাতে ।
যদিও এই কথা সত্য যে ভবিষ্যতে আমাদের সাথে কি ঘটতে চলেছে ,আমাদের জীবন কেমন ভাবে অতিবাহিত হবে , সেটি নির্ভর করে আমাদের বর্তমান কর্মের ওপর । বর্তমানে যদি আমরা ভাল কর্ম করি তাহলে ভবিষ্যতে আমরা তার ভাল ভাল ফল উপভোগ করবো এটাই স্বাভাবিক ।কিন্তু এ কথা চিরন্তন সত্য যে প্রত্যেকটি মানুষের ভাগ্য লেখা হয় ভাগ্য লেখার রাতে ।
শাবান মাসের ইবাদত ঃ
শাবান মাসের ইবাদত এর বর্ণনা করতে গিয়ে যে কথাটি না বললেই নয় সেটি হল ঃ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url